Logo
×

Follow Us

ইউরোপ

ইউক্রেনের দুই অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পুতিনের

Icon

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:৩৮

ইউক্রেনের দুই অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পুতিনের

দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিলেন পুতিন। ছবি : রয়টার্স

ইউক্রেনের দুই রুশপন্থী অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিলো রাশিয়া। পশ্চিমী দেশগুলোর সতর্কতা অগ্রাহ্য করেই গতকাল সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মস্কো। 

রাশিয়ার টিভি চ্যানেলে এক দীর্ঘ ভাষণে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, অবিলম্বে দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী সিদ্ধান্তের প্রয়োজন।’

অন্যদিকে কূটনৈতিক মহলের আশঙ্কা, এই পদক্ষেপের ফলে পশ্চিমাসমর্থিত সরকারের সঙ্গে সংঘাত শুরু হতে পারে রাশিয়ার।

ইউক্রেনকে রাশিয়ার ইতিহাসের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে অভিহিত করে পুতিন বলেন, পূর্ব ইউক্রেন এক সময় রাশিয়ার ভূমি ছিল। তিনি আত্মবিশ্বাসী যে, রাশিয়ার জনগণ তার এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাবে। 

ক্রেমলিন জানিয়েছে, পুতিন জার্মানি ও ফ্রান্সের নেতাদের ফোনকলে তার এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। পরে ডিক্রিতে সই করে তিনি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এ ভাষণ দেন। 

দীর্ঘ ভাষণে পুতিন ওই অঞ্চলের ইতিহাস তুলে ধরেন। অটোমান সাম্রাজ্য থেকে শুরু করে ন্যাটোর পূর্ব ইউরোপে সম্প্রসারণ নিয়ে সৃষ্ট সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়েও কথা বলেন তিনি।

পুতিন বলেন, ‘আমি মনে করি একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। যে সিদ্ধান্ত অনেক আগেই নেওয়া উচিত ছিল। তা হলো অবিলম্বে দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক ও লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিকের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি দেওয়া।’

গতকাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকে পুতিন সিদ্ধান্ত নেন দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন ঘোষণা করা হবে। রুশ সংবাদ সংস্থার সূত্রে জানা যায়, ওই বৈঠকে পুতিন বলেন, আপনাদের সবার মতামত জানলাম। আজই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। একটি বিবৃতিতে ক্রেমলিন জানায়, পূর্ব ইউক্রেনের দুই রুশপন্থী অঞ্চলকে স্বাধীন হিসাবে ঘোষণা করতে পারেন পুতিন। অদূর ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে লিখিত নির্দেশ দেবেন তিনি।

সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, এই সিদ্ধান্তের কথা ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসকে জানিয়েছেন পুতিন। কিন্তু টেলিফোন কথোপকথনে দুই দেশের প্রধানই অসম্মতি প্রকাশ করেছেন। তার মধ্যেই দুই অঞ্চলকে স্বাধীন হিসেবে ঘোষণা করেন পুতিন। ক্রেমলিনের রুশপন্থী নেতাদের সঙ্গে চুক্তি সাক্ষর করতে দেখা যায় পুতিনকে। 

দীর্ঘ ভাষণের পর পুতিন রাশিয়ার পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষকে এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করতে বলেন। পাশাপাশি ইউক্রেনে রুশপন্থীদের বিরুদ্ধে সরকারের সামরিক অভিযান বন্ধ করার কথা বলে পুতিনের হুঁশিয়ারি, ‘আমরা অবিলম্বে সামরিক অভিযান বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় রক্তপাতের দায় সম্পূর্ণভাবে বর্তাবে ইউক্রেনের ক্ষমতায় থাকা সরকারের উপরে। আধুনিক ইউক্রেনের সম্পূর্ণ রূপকার শুধু রাশিয়াই।’

এই স্বীকৃতি দীর্ঘ টানাপড়েনের অবসান ঘটাবে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহলের একাংশ। কারণ ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করার পর বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপে প্রায় ১৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অন্য অংশের মত আবার ভিন্ন। এ নিয়ে তারা বড় সংঘাতের আঁচ করছেন।

আবার এর ফলে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর সঙ্গে শান্তিচুক্তি শেষ হলো এবং ইউক্রেন অঞ্চলে সেনাও পাঠাতে পারবে রাশিয়া। দুই অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ, যাদের কাছে রাশিয়ার পাসপোর্ট রয়েছে, তাদের সুরক্ষার্থে এই পদক্ষেপ বলে ব্যাখ্যা দিতে পারেন পুতিন।

ফলত, ইউক্রেনের উপর পরোক্ষভাবে চাপ বাড়ছে। তাদের হাতে দুটি বিকল্প। হয় দুই অঞ্চলের অধিকার ছেড়ে দিতে হবে, নয়ত রাশিয়া সেনা বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হবে।

প্রসঙ্গত, ইউক্রেন সঙ্কটের আবহে কয়েক দিন আগে স্বঘোষিত দোনেৎস্ক পিপলস্ রিপাবলিকের জরুরি মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া একটি বিবৃতিতে বলা হয়, প্রায় সাত লাখ মানুষকে তারা রাশিয়ার সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে। ওই অঞ্চলে ইউক্রেন গোলাবর্ষণ করছে বলে অভিযোগ করা হয়। -রয়টার্স ও আনন্দবাজার পত্রিকা

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫